বয়স এখন তাঁর ১০৬ বছর। পেশায় একজন উল্কি শিল্পী (Tattoo Artist)। ফিলিপাইনের বাসিন্দা তিনি। নাম অপো হোয়াং ওড (Apo Whang-Od)। তবে সাধারণ মানুষের কাছে মারিয়া ওগে (Maria Oggay) নামেই বেশি পরিচিত। অনেক ছোটো থেকে বরাবরই উল্কি’র (Tattoo) প্রতি ঝোঁক ছিল মারিয়া ওগে’র। তাই এই কাজটি শুধু তাঁর কাছে পেশা নয়, নেশাও বটে। মারিয়া ওগে হলেন এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীনতম মাম্বাবাটোক শিল্পী (Mambabatok)। যেখানে বর্তমান উল্কি শিল্পীরা (ট্যাটু শিল্পী) মানুষের দেহে নতুনত্ব উল্কি আঁকার জন্য বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করে থাকেন, সেখানে তিনি সেই অতি পুরনো ‘বাটোক’ এখনও অবলম্বন করে চলেছেন। কারণ সেই সময় বাঁশের কঞ্চি, কাঠ-কয়েলা, পামেলা গাছের কাঁটা ও জল ছিল তাঁর উল্কি আঁকার সরঞ্জাম। আর তাই দিয়েই অবিলম্বে এঁকে চলেছেন মানুষের দেহে তাদের পছন্দ মতো উল্কি। আর করে চলেছেন নিজের পছন্দ মতো কাজ। অনেক দূর দূর থেকে মানুষ আসেন তাঁর কাছে নিজেদের দেহে উল্কি খোদাই করবার জন্য।
মারিয়া ওগে’র এই উল্কি শিল্পের গুরু হলেন তাঁরই বাবা। সেই ছোট্টবেলা থেকে তাঁর বাবার কাজ করার পদ্ধতি দেখে ও শিখে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন তিনি। আর সেই সাথে পরের প্রজন্মকেও উৎসাহ দিচ্ছেন সমান তালে। এই উল্কি শিল্পকে কেন্দ্র করে ভোগ ফ্যাশন ম্যাগাজিনের ফিলিপাইনের (Vogue Philippines) নতুন সংস্করণে গত এপ্রিল মাসে জায়গা করে নেন মারিয়া ওগে। এই ম্যাগাজিনে তিনি জানান যে, অন্য মানুষদেরই নয়, নিজের দেহে বা গায়ে যে নকশা খোদাই করা রয়েছে সেগুলিও তাঁর তৈরি। সেই নকশায় রয়েছে তাঁর অতীত, তাঁর ভ্রমণের স্মৃতি, তাঁর জীবনের নানান চড়াই-উৎরাইয়ের মতো এমন অজস্র লুকনো কাহিনী, যা তিনি উল্কি হিসেবে নিজের শরীরে নিজ হাতেই খোদাই করেছেন। সাথে তিনি আরও জানান যে, যতদিন বাঁচবেন এই কাজ তিনি চালিয়ে যাবেন, সেই সাথে আগামী প্রজন্মকেও শিক্ষা দিয়ে যাবেন।
Report – Swarnalye Paul