News United India

কেন পালিত হয় ২১শে জুন ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’? কি এর উদ্দেশ্য?

শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও সময় করে বহু লক্ষাধিক মানুষেরা মন দেন শরীরচর্চায়। আর তাই কেউ জিম, কেউ প্রাতঃ ভ্রমণ অথবা কেউ যোগ ব্যায়ামকে শরীরচর্চার অংশ হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু এতকিছুর মধ্যে থেকে যোগ ব্যায়ামকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন মানুষ। কারণ যোগ ব্যায়াম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাইরে না গিয়েও বাড়িতেই করা যায়। আর শুধু তাই নয়, যোগ ব্যায়াম হল মানুষের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার ওষুধ। তবে কেন ২১শে জুন তারিখটি আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে পালন করা হয়?

দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রসংঘে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ২১শে জুন দিনটি ‘যোগ দিবস’ হিসেবে পালিত করার প্রস্তাব দেন তিনি। আর সেই বছরেই ১১ই ডিসেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘ থেকে ঘোষণা করা হয় প্রতিবছর ২১শে জুন ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন করা হবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ উদযাপনের প্রস্তাব ১৭৭টি সদস্য দেশ সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দিয়েছিল। শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই বক্তৃতায় বলেছিলেন, “‘যোগ’ হল ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যের এক অমূল্য উপহার। এটি প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে একটি যোগসূত্র তৈরি করে। এটি মন ও দেহের একতার প্রতীক। যোগ ব্যায়াম কেবল একটি শারীরিক অনুশীলনই নয়, আমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ঐক্যের অনুভুতিতে বিশ্ব ও প্রকৃতির আবিষ্কারেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এটি আমাদের চিন্তা ও সংযমের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিও প্রদান করে। আমাদের পরিবর্তিত জীবনধারায় সচেতনতা বৃদ্ধি করে ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের সহায়তা করতে পারে। সুতরাং, আসুন আমরা সকলে মিলে এই আন্তর্জাতিক যোগ দিবস গ্রহণের জন্য কাজ করি”।

প্রথম ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০১৫

২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের ঘোষণার পর, প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করা হয় ২১শে জুন ২০১৫ সালে। এই দিনটিতে গোটা বিশ্বজুড়ে লক্ষাধিক মানুষ যোগ-ব্যায়াম করে একটি রেকর্ড তৈরি করেছিলেন। ৩৫ হাজারেও বেশি মানুষ ও ৪৮টি দেশে প্রতিনিধিরা দিল্লির রাজপথে ২১টি আসন করেছিলেন। আর এটি পুরোটাই হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। এই প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের থিম ছিল, ‘সম্প্রীতি ও শান্তির জন্য যোগ’।

দ্বিতীয় ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০১৬

এটি ছিল ভারতের দ্বিতীয় ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চণ্ডীগড়ে একসাথে সাদা টি-শার্ট ও গোলাপি ম্যাটে প্রায় ৩৫,০০০ মানুষ যোগ-ব্যায়ামে অংশ নিয়েছিলেন। এই বছর অংশ নিয়েছিল ১৭০টি দেশ। দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের থিম ছিল, ‘যুবকে সংযুক্ত করুন’।

তৃতীয় ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০১৭

এই বছর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউয়ের আম্বেদকর ময়দানে ৫৫,০০০০ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে আরও কয়েক হাজার মানুষ যোগ-ব্যায়ামে অংশ নিয়েছিলেন। এই বছরের থিম ছিল, ‘স্বাস্থ্যের জন্য যোগ’।

চতুর্থ ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০১৮

এই বছর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুনে বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫০,০০০ এর বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিল। আর সেই সাথে সৌদি আরবও দিনটি উদযাপন করেছিল। এই বছরের থিম ছিল, ‘শান্তির জন্য যোগ’।

পঞ্চম ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০১৯

এই বছরের থিম ছিল, ‘জলবায়ু কর্মের জন্য যোগ’। যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি শহরে। আর প্রতিবারের মতো এবারেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ষষ্ঠ ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০২০

এই বছর করোনা মহামারির জন্য ভার্চুয়ালে ষষ্ঠ ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের থিম ছিল, ‘স্বাস্থ্যের জন্য যোগ’।

সপ্তম ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০২১

মহামারির প্রকোপ তখনও চলায় এই বছরও ভার্চুয়ালভাবে পালন করা হয় ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’। এবছর থিম ছিল, ‘যোগের সাথে থাকুন, বাড়িতে থাকুন’।

অষ্টম ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০২২

করোনার প্রকোপে মানুষের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এই বছরের অষ্টম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের থিম ছিল, ‘মানবতার জন্য যোগ’।

নবম ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালন, ২০২৩

এই বছরের নবম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের থিম হল, “‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ নীতির সাথে এক বিশ্ব, এক এক স্বাস্থ্যের অনুরণন”।

Report – Swarnalye Paul

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read More

Top Stories