




পরিবহণ সংগঠনগুলির বাস ভাড়া বাড়ানো-সহ বেশ কয়েকটি দাবি না মেনে পঞ্চায়েত ভোটের কাজের জন্য বেসরকারি গাড়ি ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করে দিল পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশন। আর এমন ঘটনা ঘটায় পরিবহণ দফতর এবং নির্বাচন কমিশনের উপরে বেজায় ক্ষুব্ধ বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের নেতারা। যে কোনও ধরনের নির্বাচনের কাজে কমিশনকে ভোটের কাজের জন্য গাড়ি ভাড়া করে দেয় পরিবহণ দফতর। তাই বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি ভোটের কাজে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের দাবিগুলির কথা কমিশনের পাশাপাশি পরিবহণ দফতরকেও জানিয়েছিল। গত এপ্রিল মাসে এই সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবহণ দফতরে একটি ডেপুটেশন জমা দিয়েছিল ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট’। সেই ডেপুটেশনে মোট ৭টি দাবির উল্লেখ করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে দৈনিক বাস ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়েছিল।
পাশাপাশি প্রতি দিন বাসের ৩ জন করে শ্রমিককে ৩০০ টাকা করে খোরাকি দেওয়ার আবেদন করেছিল বাস সিন্ডিকেট। সঙ্গে বলা হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকাকালীন ডিজেল এবং মোবিল সরবরাহের দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। বাস ভাড়ার ৭৫ শতাংশ অগ্রিম দিতে হবে। ভোট প্রক্রিয়ার জন্য নিতে গেলে ১৫ দিনের মধ্যে বাকি বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।
আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট। সেই কারণে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। তাই সেই কাজে বেসরকারি গাড়ি ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে তারা। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর এবং কমিশনের বিরুদ্ধে পরিবহণ সংগঠনগুলির অভিযোগ, তাদের দাবিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে পুরনো ভাড়া বহাল রাখা হয়েছে। অনলাইন ক্যাব অপারেটর গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে পরিবহণ দফতর বা নির্বাচন কমিশন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করারও প্রয়োজন বোধ করেনি। বরং আমাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই পুরনো ভাড়ায় বলপূর্বক রাস্তা থেকে গাড়ি তুলে নেওয়া হচ্ছে। আমরা চেয়েছিলাম সহমতের ভিত্তিতে গাড়ি ভাড়া নেওয়া হোক। কিন্তু এই কাজে পরিবহণ দফতর বা নির্বাচন কমিশন কেউই আমাদের কথায় কান দেয়নি। যদি আমাদের দাবিগুলি যত্ন সহকারে ভেবে দেখা হত, তা হলে ভোটের কাজে গাড়ি ভাড়া নিতে রাস্তায় ধরপাকড় চালাতে হত না।’’ আর জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের তপন বলেন, ‘‘এপ্রিল মাসে চিঠি দেওয়ার পর আমরা আবারও ১৩ জুন পরিবহণ মন্ত্রী এবং পরিবহণ সচিবকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে নিজেদের দাবির কথা জানিয়েছিলাম। গাড়ি ভাড়া কেন বাড়ানো উচিত, শ্রমিকদের খোরাকি কেন বৃদ্ধি করা উচিত— সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু নির্বাচনের দোরগোড়া এসে দেখলাম আমাদের সমস্যার সমাধান হয়নি। কমিশন এবং পরিবহণ দফতর নিজেদের সিদ্ধান্ত বেসরকারি বাস মালিকদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে এমনটাই বলতে পারি।’’
Report – Snigdha Ghosh
